ঢাকা শহরের গুলিস্তান এলাকার। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন একটি বৃহত্তর মার্কেটের নির্ধারিত গাড়ি পার্কিং এলাকায় অবৈধভাবে ৬০০ দোকান বরাদ্দ দেয়া হয়, যার বিনিময়ে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট দোকানপ্রতি পঞ্চাশ লাখ থেকে শুরু করে এক কোটি টাকা পর্যন্ত চাঁদা নিয়ে নিজেদের আখের গুছিয়ে নেয়। চাঁদা দেয়ার মাধ্যমে দখলিস্বত্ব পাওয়া ব্যবসায়ীদের আশ্বাস দেয়া হয় যে, অতি অল্প সময়ের মধ্যে সিটি করপোরেশন থেকে বৈধ কাগজপত্র সংগ্রহ করে দেয়া হবে। কিন্তু গত পাঁচ-ছয় বছরে তাতো হয়ইনি বরং ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার কিছু দিন আগে সেই সব ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর কাছ থেকে দোকানপ্রতি আরো আট লাখ করে টাকা আদায় করা হয়। সম্রাট গংরা জেলে যাওয়ার পর নতুন যে সিন্ডিকেট ক্ষমতা পেয়েছে তারা বর্তমানে দোকানপ্রতি আড়াই লাখ টাকা চাঁদা নির্ধারণ করে কী যে তাণ্ডব চালাচ্ছে তা কেবল ভুক্তভোগীরাই বলতে পারেন।র্নীতির হাটের একটি প্রধানতম বৈশিষ্ট্য হলোÑ এখানে কোনো জাতপাত নেই। দুর্নীতির চাড়াল-চণ্ডাল, নাপিত-ধোপা-মেথর-ঝাড়–দার এবং জমিদার সব একই থালায় উপুড় হয়ে দুর্নীতিজাত খাদ্য কুজাত প্রাণীরা যেভাবে জিহ্বা দিয়ে লেহন করে খায় ঠিক সেভাবে লেহন করতে থাকে। তাদের লজ্জা-শরম থাকে না। সবাই একত্রে উলঙ্গ হয়ে দুর্নীতির সঙ্গীত বাজিয়ে ধিতাং ধিতাং নাচতে থাকে গভীর রাত অবধি। তারা দুর্নীতির অর্থ, অবৈধ নারী সঙ্গ বা পুরুষ সঙ্গ, মদ-গাঁজা, হেরোইন, তাঁড়ি, ইয়াবা, মারিজুয়ানা এবং ইন্ডিয়ান শালপাতার বিড়ি একত্রে ককটেল বানিয়ে ভক্ষণ না করা পর্যন্ত স্বস্তি পায় না। আদিকালে যেগুলোকে বিকৃত রুচি বলা হতো সেগুলোকে একালের দুর্নীতিবাজরা সুরুচি বানিয়ে ফেলেছে এবং মহাকালের সুরুচি নামক শব্দটিকে আমাজনের জঙ্গলে নির্বাসন দিয়েছে।বর্তমানের দুর্নীতির বিরুদ্ধে মুখ খোলা যাচ্ছে না। দুর্নীতির বরপুত্রদের ধরিয়ে দেয়া তো দূরের কথাÑ তাদের দিকে তাকানো যাচ্ছে না। দুর্নীতির জুলুমে জর্জিরত আমজনতা প্রতিকার চাওয়ার সাহস শক্তিটুকু হারিয়ে ফেলছে। তারা কেবল দুর্নীতিবাজদের অত্যাচার চোখ বুজে সহ্য করার নিদারুণ এক যোগ্যতা অর্জন করেছে।